আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর সুরক্ষা দিবস "বিশ্বব্যাপী সহযোগিতাই পারে পৃথিবীতে প্রাণের অভিপ্ত রক্ষা করতে
ওজোন গ্যাস
ওজোন (Os) সর্বপ্রথম ১৭৮৫ সালে ডাচ পদার্থবিদ এম. ভ্যান মারুম আবিষ্কার করেন। তিনি লক্ষ্য করেছেন যে যখন বৈদ্যুতিক নিঃসরণ বাতাসের মধ্য দিয়ে যায়, তখন বাতাস একটি নির্দিষ্ট গন্ধ অর্জন করে। এবং এটি ওজোন স্তরের পরবর্তীতে ১৮৪০ সালে জার্মান রসায়নবিদ ক্রিশ্চিয়ান ফ্রেডরিখ শোনবেইন দ্বারা "ওজোন" শব্দটি প্রবর্তিত হয়েছিল। গ্রীক 'ozon' শব্দের অর্থ গন্ধ পাওয়া। ওজোন কড়া গন্ধযুক্ত হালকা নীল বর্ণের গ্যাস।
ভালো ওজোন ও খারাপ ওজোন
বায়ুমন্ডলের উচ্চস্তরে প্রাপ্ত ওজোনকে ভালো ওজোন হিসেবে ধরা হয় যেহেতু এটি অতিবেগুনী রশ্মি প্রতিফলিত করে থাকে। মাটির কাছাকাছি যে ওজোন পাওয়া যায় সেটিকে খারাপ ওজোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয় যা মূলত কলকারখানা এবং যানবাহন থেকে নির্গত হয়। মাটির কাছাকাছি প্রাপ্ত এই গ্যাস অত্যন্ত বিষাক্ত ধরনের।
ওজোন স্তর
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ওজোন গ্যাসের স্তর যা বায়ুমন্ডলের স্ট্যাটোস্ফিয়ার স্তরে পাওয়া যায়, এই গুরুত্বপূর্ণ গ্যাসের চাদর সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণ থেকে পৃথিবীকে বাঁচায়।
ওজোন স্তরের উপকারিতা
ওজোন স্তর অতিবেগুনি রশ্মি প্রতিফলিত করে থাকে। এটি তাপমাত্রা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এটি মেরুর বরফ স্থানান্তর করে থাকে । এই গ্যাসের স্তর মানবস্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করে থাকে।
ওজোন স্তর ক্ষয়ের উৎস
সূর্যরশ্মির প্রভাবে ওজোনের সৃষ্টি হয় আবার প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন গ্যাসের ফলে ওজোন স্তর ক্ষয় হয় এভাবে একটি ভারসাম্য থাকে। কিন্তু মানব-সৃষ্ট কারণে উৎপন্ন বায়ু দূষণের ফলে ওজোন ক্ষয় হয়ে ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে ও বৃহৎ মাত্রায় ওজোন স্তর ধ্বংস হচ্ছে।
ওজোন স্তর ক্ষয়ের কারণ
সিএফসি গ্যাস এবং অতিবেগুনি রশ্মি মূলত ওজোন গ্যাস ক্ষয়ের জন্য দ্বায়ী। অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবে সিএফসি গ্যাসের ক্লোরিন বিজারিত হয় এবং এটি ওজোন স্তরের ক্ষয়সাধন করে থাকে।
পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের উপর ওজোন স্তর ক্ষয়ের প্রভাব
পরিবেশের উপর প্রভাব: ওজোন উদ্ভিদের গ্যাসীয় আদান-প্রদানের জন্য তাদের পাতায় থাকা আণুবিক্ষণিক ছিদ্রগুলি খোলার ক্ষমতাকে বাধা দিয়ে গাছপালা এবং বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করে। এটি কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ স্তর হ্রাস করে সালোকসংশেষণ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে যা উদ্ভিদের খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়া ব্যাহত করে। স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব: গ্রাউন্ড লেভেল ওজোন নিশ্বাসের সাথে প্রতিনিয়ত শোষণ করলে বুকে ব্যথা, কাশি, গলা জ্বলা সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে । এটি ব্রঙ্কাইটিস, এ্যামফিসেমা এবং অ্যাজমা রোগের জন্য দায়ী।
ওজোন স্তর ক্ষয় নিয়ন্ত্রণের গৃহীত পদক্ষেপ
মন্ট্রিল প্রোটোকল: ওজোন ক্ষয় চিহ্নিত করার জন্য ১৯৮৭ সালে ওজোন ক্ষয়কারী উপাদানের উপরে এই প্রোটোকল ধার্য করা হয়। এটি প্রথম চুক্তি যেটি পৃথিবীর সকল দেশ স্বাক্ষর করেছে। এই প্রোটোকলের উদেশ্য হচ্ছে ওজোন ক্ষয়কারী উপাদানের উৎপাদন বন্ধ করা।
ইইউ রেগুলেশন: এই রেগুলেশনের মাধ্যমে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন মন্ট্রিল প্রোটোকল বাস্তবায়নের পাশাপাশি ক্ষতিকর উপাদানের ব্যবহার কমিয়ে আনতে পেরেছে । এছাড়া এটি আমদানি-রপ্তানীকৃত পণ্যের উপরে লাইসেন্স করার নিয়ম আরোপ করে যা মন্ট্রিল প্রোটোকল চিহ্নিত করে থাকে।
ওজোন স্তর ক্ষয়ের প্রতিকার
১. যানবাহনে লেডবিহীন জ্বালানী ব্যবহার করতে হবে।
২. যানবাহনে ক্যাটালিটিক কনভার্টার ব্যবহার করতে হবে।
৩. সিএফসির বদলে এইচএফসি ব্যবহার করতে হবে।
৪. মন্ট্রিল প্রোটোকল বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
৬. পরিবেশ অধিদপ্তর ইতিমধ্যেই UNDP বাংলাদেশের সহায়তায় ওজোন ক্ষয়কারী পদার্থ (ODSs) নিয়ন্ত্রণে “HCFC ফেজ আউট ম্যানেজমেন্ট প্যান ২০১৮ (পর্যায়-২)” প্রস্তুত করেছে।
জনসচেতনতায়: স্টামফোর্ড বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) সহযোগিতায়: কম্পাস প্রোগাম, ইউএস ফরেস্ট সার্ভিস ইন্টারন্যাশনাল প্রধান
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির উপস্থিতির ফলে ক্লোরোফ্লুরো কার্বন ও ক্লোরিন পরমাণু রাসায়নিক প্রক্রিয়াতে বিভাজিত হয়
পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের উপর ওজোন স্তর ক্ষয়ের প্রভাব
পরিবেশের উপর প্রভাব: ওজোন উদ্ভিদের গ্যাসীয় আদান-প্রদানের জন্য তাদের পাতায় থাকা আণুবিক্ষণিক ছিদ্রগুলি খোলার ক্ষমতাকে বাধা দিয়ে গাছপালা এবং বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করে। এটি কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে যা উদ্ভিদের খাদ্য
0 মন্তব্যসমূহ